অলিভ অয়েল এর উপকারিতা | অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম

আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন যে অলিভ অয়েল এর উপকারিতা, অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়মমুখে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম ও চুলে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম

অলিভ অয়েল এর উপকারিতা । অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম
অলিভ অয়েল এর উপকারিতা  |

রান্নার জন্য তেল ছাড়া যেন চলেই না। আমরা প্রতিদিনের খাবারে রান্নায় কমবেশি সবাই বিভিন্ন ভোজ্য তেল খেয়ে থাকি। বেশির ভাগ মানুষই সয়াবিন তেল আবার কউ সরিষার তেল এবং ঘি খেয়ে থাকি। তবে কিছু সংক্ষক লোক অন্যান্য তেল খেয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই সব তেলে থেকে অলিভ অয়েল তেল সবচেয়ে উপকারী বেশি। তাহলে চলুন জেনে আসি অলিভ অয়েল এর উপকারিতা। 

প্রাচীনকাল থেকে মানুষ অলিভ অয়েল কে তেলের স্বর্ণ বলতো। কারণ এই তেল মানব শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এই তেল মূলত জলপাই থেকে তৈরি করা হয়। যারা শরীর সম্পর্কে সচেতন তারা অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করেন এবং রান্না ঘরে সরিষার তেলের জায়গায় অলিভ অয়েল তেল রাখেন।

অলিভ অয়েল এর উপকারিতা 

স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী:

  1. অলিভ অয়েলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধে সাহায্য করে। 
  2. অলিভ অয়েল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  3. অলিভ অয়েল হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  4. অলিভ অয়েল মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
  5. অলিভ অয়েল স্তন ক্যানসার থেকে মুক্তি দেয়। 
  6. হার্ট অ্যাটাক এর ঝুকি কমাতে  সহায়তা করে।
  7. জরায়ু ক্যানসার নিরাময়ে অনেকটা ভুমিকা রাখে।
  8. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

ত্বক ও চুলের জন্য:

ত্বকের ময়েশ্চারাইজার: অলিভ অয়েল ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে এবং শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে।

ব্রণ প্রতিরোধ: অলিভ অয়েল ব্রণ প্রতিরোধে এবং ব্রণের দাগ কমাতে সাহায্য করে।

বয়সের ছাপ: অলিভ অয়েল ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করতে এবং ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে।

চুলের বৃদ্ধি: অলিভ অয়েল চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে এবং চুলকে পুষ্ট করতে সাহায্য করে।

চুল পড়া: অলিভ অয়েল চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।

অন্যান্য ব্যবহার:

মেকআপ রিমুভার: অলিভ অয়েল মেকআপ রিমুভার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম

অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম নির্ভর করে আপনি কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন তার উপর।

ত্বকের জন্য:

ময়েশ্চারাইজার হিসেবে: গোসলের পরে হালকা গরম অলিভ অয়েল ত্বকে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন।শুষ্ক ত্বকের জন্য, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অলিভ অয়েল মুখে ও গায়ে লাগান। ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে, অলিভ অয়েলের সাথে চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে ব্যবহার করুন।

মেকআপ রিমুভার হিসেবে: অল্প অলিভ অয়েল তুলোর বলিতে নিয়ে মুখের মেকআপ মুছে ফেলুন। এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন।

চোখের যত্নে: রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অল্প অলিভ অয়েল চোখের পাতায় লাগান। এটি চোখের পাতা নরম ও ময়েশ্চারাইজড রাখবে।

চুলের জন্য:

চুলের গ্রোথ বাড়াতে: সপ্তাহে দুইবার অলিভ অয়েল গরম করে মাথায় ম্যাসাজ করুন। ৩০ মিনিট পরে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

চুল নরম করতে: শ্যাম্পু করার আগে অলিভ অয়েল চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন।

মেহেদি লাগানোর পরে: হাতে অলিভ অয়েল লাগালে মেহেদির রং গাঢ় হয়।

নখের যত্নে: অলিভ অয়েল নখে লাগালে নখ নরম ও শক্ত হয়।

সতর্কতা:

  • অলিভ অয়েল ব্যবহারের আগে অ্যালার্জি পরীক্ষা করে নিন।
  • ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়, তাহলে অতিরিক্ত অলিভ অয়েল ব্যবহার না করাই ভালো।
  • অলিভ অয়েল চোখে পড়লে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম
অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম |

অলিভ অয়েল ব্যবহারের কিছু উপকারিতা:

  • ত্বক ও চুলকে ময়েশ্চারাইজড করে।
  • ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে।
  • চুলের গ্রোথ বাড়ায়।
  • ড্যান্ড্রাফ দূর করে।
  • হৃৎপিণ্ডের জন্য ভালো।
  • কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে

আরো পড়ুন: আকরোট এর উপকারিতা ও অপকারিতা

কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত

মুখে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম

কোন ধরণের অলিভ অয়েল ব্যবহার করবেন:

মুখের জন্য এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল (EVOO) ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। কারণ এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে। শুষ্ক ত্বকের জন্য ভার্জিন অলিভ অয়েল (VOO) ব্যবহার করা যেতে পারে। তেলতেলে ত্বকের জন্য লাইট অলিভ অয়েল ব্যবহার করা ভালো।

ব্যবহারের নিয়ম:

পরিষ্কারকরণ: মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন।
তেল গরম করা: অল্প তেল হাতের তালুতে নিয়ে হালকা গরম করে নিন।
প্রয়োগ: গরম তেল আঙুলের ডগায় নিয়ে মুখে ও গলায় আলতো করে মালিশ করুন।
সময়: রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে তেল ব্যবহার করা ভালো।
ধুয়ে ফেলা: 15-20 মিনিট পরে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
নিয়মিত ব্যবহার: সপ্তাহে 2-3 বার ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

ব্যবহারের সুবিধা:

ময়েশ্চারাইজার: ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং শুষ্কতা দূর করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: ত্বকের বয়সের ছাপ দূর করে।
প্রদাহ কমায়: ব্রণ, ফুসকুড়ি, এবং ত্বকের জ্বালা কমাতে সাহায্য করে।
মেকআপ রিমুভার: মেকআপ তুলতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সতর্কতা:

অ্যালার্জি: যদি অলিভ অয়েলে অ্যালার্জি থাকে তবে ব্যবহার করবেন না।
তেলতেলে ত্বক: তেলতেলে ত্বকের জন্য অল্প পরিমাণে তেল ব্যবহার করুন।
ব্রণপ্রবণ ত্বক: ব্রণপ্রবণ ত্বকের জন্য তেল ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
অন্যান্য ব্যবহার:

ঠোঁট ফাটা: ঠোঁটে অলিভ অয়েল লাগালে ঠোঁট ফাটা দূর হয়।
চোখের যত্ন: চোখের চারপাশে অল্প পরিমাণে তেল লাগালে চোখের ত্বক উজ্জ্বল হয়।
চুলের যত্ন: চুলে অলিভ অয়েল লাগালে চুল নরম ও কোমল হয়।

চুলে অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম

অলিভ অয়েল চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি তেল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অপরিপ্ত ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা চুলের বৃদ্ধি, পুষ্টি এবং সুরক্ষায় সাহায্য করে।

চুলে কিভাবে অলিভ অয়েল ব্যবহার করব?

১. হেয়ার মাস্ক হিসেবে: আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী অলিভ অয়েলের সাথে অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে পারেন। শুষ্ক চুলের জন্য, অলিভ অয়েলের সাথে মধু, ডিম, অ্যাভোকাডো, অথবা কলা মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তৈলাক্ত চুলের জন্য, অলিভ অয়েলের সাথে লেবুর রস, দই, অথবা মেথি গুঁড়া মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা অপেক্ষা করুন। এরপর ভালো করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

কিছু টিপস: সপ্তাহে এক বা দুবার অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী তেল ব্যবহারের পরিমাণ নির্ধারণ করুন। তেল ব্যবহারের পর ভালো করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন এবং চুল রোদে শুকান।

অলিভ অয়েল ব্যবহারের উপকারিতা: চুলকে বৃদ্ধি করে, চুলকে পুষ্টি প্রদান করে, চুল নরম ও মুলায়ম করে, চুলের আগা ফাটা রোধ করে, চুলকে ঝলমল করে, চুলের খুশকি দুর করে, চুলকে মোটাতাজা করে পাতলা কমায়।

[ আমাদের পোষ্ট সবার আগে পেতে গুগল নিউজে ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন ]

*আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url